ওভারহেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতে ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন-এর তুলনা (Comparisons between overhead and underground transmission and distribution systems) :
বৈদ্যুতিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন ওভারহেড লাইন পদ্ধতি বা আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল পদ্ধতির মধ্যে যে-কোনোভাবেই হতে পারে। এখানে উভয় পদ্ধতির তুলনামূলক আলোচনা করা হলো :
ওভারহেড পদ্ধতি -
১.ওভারহেড লাইন সাধারণত কাঠের, কংক্রিটের বা স্টিলের পোল বা টাওয়ারে ইন্সুলেটরের মাধ্যমে ঝুলানো থাকে ।
২.ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার
সাধারণত লাইনের পোলের উপর বসানো থাকে।
৩.দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
৪.প্রাথমিক খরচ তুলনামূলক কম।
৫.লাইনের ক্ষমতা সম্প্রসারণ বা পরিবর্তন সহজ।
৬.ত্রুটির সম্ভাবনা থাকে।
৭.যেহেতু লাইন পরিবাহী দেখা যায় ফলে লাইনের ত্রুটি শনাক্তকরণ ও মেরামত সহজ।
৮.রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলক বেশি ।
৯.লাইন পরিবাহীর মধ্যবর্তী দূরত্ব (Spacing) বেশি বিধায় লাইনের ইন্ডাকটেন্স বেশি, ফলে ভোল্টেজ ড্রপ বেশি হয় ।
১০.যেহেতু লাইন পরিবাহীর মধ্যবর্তী দূরত্ব বেশি বিধায় লাইনের ক্যাপাসিট্যান্স তুলনামূলক কম, ফলে চার্জিং কারেন্টের পরিমাণ কম হয়।
১১.একই ধাতুর সমগ্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট পরিবাহীর কারেন্ট বহন ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি।
১২. বজ্রপাত ও কোনো বস্তু বা গাছপালা লাইনের উপর পড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
১৩. সার্জ ভোল্টেজ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হয়।
১৪. পার্শ্ববর্তী কমিউনিকেশন লাইনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
১৫. যেহেতু লাইন পরিবাহী খোলা জায়গা দিয়ে নিতে হয়, ফলে আধুনিক শহরের সৌন্দর্যে হানি ঘটে।
১৬. বিতরণ লাইনে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরির সুযোগ থাকে।
আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতি -
১.আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল মাটির নিচে (সাধারণত রাস্তা বা ফুটপাথ) কম্ভুইট বা ট্রেঞ্চের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
২.ডিস্ট্রিবিউশন লাইনের ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার পৃথক প্লাটফর্মযুক্ত ঘরের ভিতরে বসানো হয়।
৩.দুর্ঘটনার সম্ভাবনা খুব কম।
৪.প্রাথমিক খরচ খুব বেশি। একই ভোল্টেজে একই পরিমাণ পাওয়ার ট্রান্সমিশনের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতে ওভারহেড লাইনের তুলনায় খরচ ন্যূনতম দ্বিগুণ, অনেক ক্ষেত্রে 5-10 গুণ পর্যন্ত হয়।
৫. ম্যানহোল, ডাক্ট প্রভৃতি স্থায়ীভাবে বসানো হয়, ফলে পরিবর্তন সম্ভব নয়। নতুন লাইন বসিয়ে সম্প্রসারণ করা হয়।
৬. ক্যাবল যেহেতু ভালোভাবে ইনসুলেশন যুক্ত থাকে এবং মাটির নিচে ট্রেঞ্চের মধ্যে থাকে, ফলে ত্রুটির সম্ভাবনা খুব কম।
৭. যদি কোনো ত্রুটি সংঘটিত হয়, সেটা শনাক্তকরণ ও
মেরামত করা কষ্টসাধ্য ও জটিল।
৮. বাতাস, বরফ, বজ্রপাতজনিত সমস্যা না থাকায়
রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুব কম।
৯. লাইন পরিবাহীর মধ্যবর্তী দূরত্ব (Spacing) খুব কম বিধায় লাইনের ইন্ডাকটেন্সও কম, ফলে ভোল্টেজ ড্রপ কম হয়।
১০. যেহেতু লাইন পরিবাহীর মধ্যবর্তী দূরত্ব অল্প বিধায় লাইনের ক্যাপাসিট্যান্স খুব বেশি ফলে চার্জিং কারেন্টের পরিমাণও বেশি হয়।
১১. একই ধাতুর সমপ্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট পরিবাহীর কারেন্ট বহন ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম।
১২. বজ্রপাত ও কোনো কিছু লাইনের উপর পড়ার সম্ভাবনামুক্ত। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হবার প্রশ্ন উঠে না।
১৩. ক্যাবলের ধাতব শিথ সার্জ ভোল্টেজ শোষণ করে।
১৪. কমিউনিকেশন সার্কিটে বিঘ্ন সৃষ্টি করে না।
১৫. যেহেতু লাইন পরিবাহী দৃষ্টিগোচর হয় না ফলে সৌন্দর্যে হানি ঘটায় না। খরচ বেশি হলেও আধুনিক শহরের বিতরণ ব্যবস্থায় সৌন্দর্য ও বিপদের ঝুঁকি বিবেচনা করে উত্তম ব্যবস্থা হিসাবে পরিগণিত।
১৬. কর্তৃপক্ষীয় যথাযথ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ হাত দিতে পারে না।
No comments:
Post a Comment